র্যাবের অভিযানে বিপুল অবৈধ অর্থ ও স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজউক ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার দুদক উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম স্বাক্ষরিত আলাদা চিঠিতে তাদের ৮ ও ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক প্রণব কুমার ভাট্টাচার্য্য তাদের তলবের বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ওই সাতজনের মধ্যে তিনজনকে আগামী ৮ ডিসেম্বর ডাকা হয়েছে। এরমধ্যে রাজউকের সিবিএ নেতা আবদুল জলিলকে এ দিন সকাল ১০টায়, রাজউকের নিম্নমান সহকারী ও সিবিএ নেতা মো. ওবায়দুল্লাহকে সকাল সাড়ে ১১টায় ও রাজউকের উচ্চমান সহকারী ও প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল মালেককে দুপুর ২টায় ডাকা হয়েছে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলামকে আগামী ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসূকে একই দিন বেলা সাড়ে ১১টায় ডাকা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৫৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শফিকুল ওরফে সোনা শফিককে আগামী ১০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় ও ডিএনসিসির সাবেক কমিশনার বিএনপি নেতা এমএ কাউয়ুমকে বেলা সাড়ে ১১টায় ডাকা হয়েছে।
দুদক উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম ও সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরীর সমন্বয়ে দুই সদস্যের একটি বিশেষ টিম গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে। অনুসন্ধানে গোল্ডেন মনিরের দুর্নীতির সঙ্গে ওই সাতজনের সংশ্নিষ্টতা পেয়েছে দুদক। এ কারণে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের স্বর্ণ চোরাচালান, বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি, রাজউক-গণপূর্তের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে হয়েছে এমন সংশ্লিষ্টতা মিলছে। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে জমি দখল, রাজউকের দুই শতাধিক প্লট দখল ও হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে।
এর আগে গত ২৬ নভেম্বর গোল্ডেন মনির ও তার স্ত্রী রওশন আক্তারের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠায় দুদক। দুদক পরিচালক আকতার হোসেন আজাদের স্বাক্ষর করা নোটিশ দুটি তাদের ঠিকানায় পাঠানো হয়।
স্বর্ণ চোরাচালান, অবৈধ সম্পদ অর্জন, বেআইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখা, প্রতারণা, জালিয়াতির অভিযোগে গত ২১ নভেম্বর গোল্ডেন মনিরকে রাজধানীর বাড্ডায় তার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তিনি বর্তমানে রিমান্ডে আছেন।